শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

মরছে পাহাড়, ধুঁকছে ছড়া

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ   |   বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

মরছে পাহাড়, ধুঁকছে ছড়া

একজন শিক্ষিত বিশেষ পেশার মানুষ পাহাড়, নদী, পাহাড়ি ছড়া এসব নিয়ে আমার এক বক্ত্যবের সমালোচনা করেছেন এই বলে যে অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আমি কথা বলে সময় ক্ষেপণ করি। নদী এবং পাহাড় পর্বত মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশে কি ভূমিকা রেখেছে এমনতরো বিষয়ে তার অজ্ঞতা আমাকে পীড়া দিয়েছে। কিন্তু কেন এ নিয়েই এ লেখা ।
আমি বাল্যকাল থেকে একটি পাহাড়ের পাদদেশে বেঁড়ে ওঠেছি। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার রতনপুর নামের সুন্দরতম গ্রামটিতে আমার জন্ম। গ্রামের পূর্বদিক ঘেঁষে রঘুনন্দন পাহাড়। পাহাড় থেকে বেয়ে আসা ছড়ার সোনালি বালু, পাহাড়ি ঢলে বা বানের ধ্বংসলীলা দেখে যেমন প্রকৃতিকে সমীহ করতে শিখেছি তেমনি বানের পানি সহসাই চলে গেলে উজানি মাছের সমারোহে কই, মাগুর এসব মাছ ধরার সম্ভাবনা ও সুযোগ তরুণ মনে শিহরণ জাগাত। রঘুনন্দন থেকে নেমে আসা এসব ছড়ার মূল্যমান নানাবিদ। বৃহত্তর সিলেটে প্রবেশর পথে, সে ট্রেনে বা সড়ক পথেই হোক না কেন, তেলিয়াপাড়া থেকে শুরু করে শাহাজিবাজার অবধি রঘুনন্দন থেকে পূর্ব-পশ্চিম সমান্তরালে অন্তত দশ বারোটি ছড়া নেমে এসেছে তেলিয়াপাড়া, সুরমা, জগদীশপুর, বৈকুন্ঠপুর, নোয়াপাড়া চা বাগান ভেদ করে। ছড়াগুলোগুলো চা চাষে অত্যাবশকীয় ভূমিকা পালন করে। ছোঁয়ানো সেচ ছাড়া ও চা বাগানগুলোতে আচ্ছাদনী বা ছায়াদানকারী (Shade tree) বৃক্ষ হিসেবে ছড়ার অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। বিকল্প ব্যবস্থা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সমালোচক বিশেষ পেশার মানুষটি সব না জানার কথা নয় কারণ তার গ্রামের পাশে ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের চা বাগান আছে। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ী চড়া এবং স্থানে স্থানে সোনাই নদী। উৎসস্থল ত্রিপূরার রঘুনন্দন অংশ।
এ কথাগুলোই আমি বলেছিলাম মাধবপুর-চুনারুঘাট উপজেলাদ্বয়ের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের জন্য মাধবপুর ফাউন্ডেশন আয়োজিত সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে। আরো বলেছিলাম এই চড়াগুলো পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে ধান মাঠের ও উপকারে আসে। সেচ সুবিধা দেয়, মাছের যোগানে ও কাজে আসে। বলেছিলাম পাহাড়টির বাংলদেশ অংশ মানুষ, লোভী মহালদার এদের বোধহীন কর্মকাণ্ডে ন্যাড়া হয়ে গেছে। ছনমুড়া এখন বিলীন, মূলি বাঁশ বাগানগুলো হারিয়ে গেছে , হরিণ, বনমোরগ, বানর, হনুমান সহ পশু-পাখী , নানান ধরনের পাহাড়ী ফল মূল এখন আর রঘুনন্দনে পাওয়া যায়না। অবিবেচনা প্রসূত আনারস চাষে আর্থিক লোকসানের সাথে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাহাড়ের মাটি। উপরিভাগের মাটির আস্তরন (topsoil) সরে যাওয়ায় অমূল্য সম্পদ ছন , বাঁশ, শাল-সেগুন অন্যান্য বৃক্ষ আগের মত জন্মে না। মৃত প্রায় রঘুনন্দন পাহাড়, প্রাণের স্পন্দন যোগাত যে ছড়াগুলো সেইপানির আঁধার ও দ্রুত মরে যাচ্ছে। এখনো সময় আছে রঘুনন্দনকে পুনর্জীবিত করার, ছড়াগুলোকে পানি, বালুতে সঞ্জীবিত করার। প্রয়োজন কালক্ষেপণ না করে বিজ্ঞানসম্মত সাহসী উদ্যোগ। রঘুনন্দন বাঁচলে আশেপাশের জনপদ বাঁচবে, চড়া বাঁচলে চা-শিল্প লাভবান হবে, পশুপাখি, মৎস্য, বৃক্ষরাজি উজ্জীবিত হবে, পরিবেশ উন্নততর হবে। কালবিলম্ব না করে জোরালো ব্যবস্থা নিলে মানুষ ও প্রাণী জগত উপকৃত হবে।


advertisement

Posted ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6289 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1309 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1154 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.